‘ফ্যাসিবাদ নয়, সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ নয়’ — ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতায় রুশ কমিউনিস্টরা

 

রাশিয়ান কমিউনিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টি (আরসিডব্লুপি) মনে করে ইউক্রেনে রাশিয়ার ভূমিকা আগ্রাসন ছাড়া কিছু নয়। তাঁরা স্পষ্ট বলেছে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের আসল লক্ষ্য হল ‘‘বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার অবস্থানকে শক্তিশালী করা। রুশ সরকার বা মার্কিন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) নেতাদের শ্রমজীবী মানুষের জন্য কোনও মাথাব্যথা নেই। এই যুদ্ধ যে আসলে রাশিয়ান রাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, তা নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই”। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পার্টি মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং রাশিয়ার মধ্যে আন্তঃ-সাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বই এই সংঘাতের উৎস’। ‘রাশিয়ার তুলনায় বেশি শক্তিশালী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে দুর্বল করতে এবং ইউরোপীয় বাজারে তার প্রভাব বিস্তার করতেই এই যুদ্ধে মদত দিচ্ছে।’

রাশিয়ান কমিউনিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টি মনে করে, কিয়েভের শাসকদের হাত থেকে ডনবাস এলাকার জনগণের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার ন্যায্য। কিন্তু ‘সোভিয়েত-বিরোধী’ পুতিন ডনবাস-এর পাশে দাঁড়ানোকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করে চরম রক্তলোলুপ হিংস্র যুদ্ধ চাইছে। ‘রাশিয়ান সৈন্যবাহিনীর সাহায্যে ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চলও সম্পূর্ণভাবে দখল ও লুঠের পরিকল্পনা’ করছে। সে জন্যই ‘আমরা এই যুদ্ধকে সাম্রাজ্যবাদী দখলদারির যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করছি এবং সাম্রাজ্যবাদীদের কাউকেই আমরা সমর্থন করতে পারছি না’। আরসিডব্লুপি মনে করে, ‘এর ফলে প্রভুরা নয়, উভয় পক্ষের শ্রমিকরাই মারা যাবে। শ্রেণি-বন্ধুদের জন্য প্রাণ দেওয়া গর্বের, কিন্তু মালিকদের স্বার্থের জন্য প্রাণ দেওয়া ও হত্যা করা মেনে নেওয়া যায় না, তা বোকামি এবং অপরাধ। আরসিডব্লুপি, যাকে রাশিয়ার নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ডনবাসে তথাকথিত ‘জনগণের প্রজাতন্ত্র’-এর স্বীকৃতিকে স্বাগত জানায়। আগের বছরগুলিতে আমাদের দল এই অবস্থানের পক্ষে ছিল’।

বিবৃতির শেষে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানের বিরুদ্ধে তার অবস্থানকে আবার দৃঢ় ভাবে তুলে ধরে আরসিডব্লুপি জানিয়েছে, শুধুমাত্র সমাজতন্ত্রের পথই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে–‘‘সব দেশের বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী জনগণের সাধারণ সংগ্রাম এই শ্রেণির দলগুলোর প্রধান কৌশলগত লাইন হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি”।