নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে বাধাপ্রাপ্ত হবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বললেন অধ্যাপকরা

অধ্যাপক সংহতি মঞ্চের পক্ষ থেকে খড়গপুর কলেজে ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হল ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম বিষয়ক ওয়ার্কশপ। উদ্বোধনী ভাষণ দেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবব্রত বেরা ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দুর্গাশঙ্কর রথ। যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদীয় বিতর্ক ছাড়াই এবং জনমতকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে বক্তারা তার তীব্র বিরোধিতা করেন।

‘ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম’ সম্পর্কে বক্তারা বলেন, এর মাধ্যমে বেদ, পুরাণ, মনুস্মৃতি ইত্যাদি সংস্কৃত শাস্ত্র, বাণভট্টের কাদম্বরী নাটকে বর্ণিত চৌষট্টি কলা, সপ্তঋষির ধারণা, যোগ, লিখিত মাধ্যম ছাড়াই বেদ শিক্ষার শ্রুতিনির্ভর ব্যবস্থা ইত্যাদি ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। অথচ এ থেকে তাঁরা বাদ দিয়েছেন এ দেশের মাটিতে গড়ে ওঠা প্রাচীনকাল এবং মধ্যযুগের জ্ঞান-বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় অবদানগুলিকে। সেখানে স্থান পায়নি লোকায়ত দর্শনের বস্তুবাদী ধারণা। আর্যভট্ট, ভাস্কর, কণাদ, শ্রীধরাচার্য, চরক, সুশ্রুত, জীবক প্রমুখ ব্যক্তিদের হাত ধরে গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা কিংবা প্রাচীন রসায়নবিদ্যা, ধাতুবিদ্যার অগ্রগতি ও চর্চা কখন, কেন বন্ধ হয়ে গেল তার ইতিহাসও এর মধ্যে নেই। এমনকী ভারতবর্ষে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও নবজাগরণকে ভিত্তি করে যে উন্নত চিন্তা ও মূল্যবোধ এসেছিল এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছিল তাও এর মধ্যে স্থান পায়নি। বক্তারা বলেন, এর মধ্য দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গড়ে উঠবে অন্ধবিশ্বাস এবং উগ্র ধর্মভিত্তিক জাত্যাভিমান। মারাত্মকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া। ২০ জন অধ্যাপক বক্তব্য রাখেন। সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক সোমনাথ দে ও অধ্যাপক মঙ্গল নায়ক।