দিল্লির রিলিফ ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা

একতরফা গণহত্যায় বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লির খাজুরিখাস এলাকায় ৭ মার্চ মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার এবং সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের পক্ষ থেকে মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়। ক্যাম্পে বিনামূল্যে ১১০ জন রোগীর চিকিৎসা করেন ডাক্তাররা। এঁদের বেশিরভাগই আক্রমণের শিকার। অনেকেই মানসিক আঘাতে বিপর্যস্ত। হাত-পা ভাঙা, লাঠি ও ইটের ঘায়ে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। উপস্থিত চিকিৎসকরা বলেন, মেডিকেল এথিক্স অনুযায়ী ডাক্তার হিসাবে আমাদের মানুষের কষ্ট দূর করার চেষ্টা করা উচিত, জাত-বর্ণ-ধর্ম এসব আমরা দেখব না।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর মেডিকেল টিমের অভিমত

১) এই এলাকায় ৪৭টি বাড়ি পুড়িয়েদেওয়া হয়েছে। প্রায় ৭ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে কোনও রকম প্রতিরোধের সুযোগ না দিয়ে হত্যা সহ যে ধ্বংসলীলা সংগঠিত করা হয়েছে তা বাস্তবে গণহত্যা। মূলত দেশ জুড়ে যে সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলন চলছে তা দমন করার উদ্দেশ্যেই বিজেপি-আরএসএস এই গণহত্যা ঘটিয়েছে।

২) খাজুরিখাসে ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টা থেকে যে আক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা চলেছে দুপুর দুটো পর্যন্ত। অথচ এখান থেকে থানার দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার। অসংখ্য ফোন করা সত্ত্বেও ঠিক সময়ে পুলিশ আসেনি। পুলিশ এসেছে প্রায় ৫ ঘণ্টা পরে। বেশিরভাগ ঘর-বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে যে যার মতো পালিয়ে যাবার ফলে আগুন নেভানোর কেউ ছিল না। আগুনও নিভেছে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার পর। আগুন লাগানো হয়েছিল পেট্রল বোমা এবং ছোট ছোট গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে। আগুন লাগানোর আগে যথেচ্ছ লুটপাট করা হয়েছে। প্রথমেই রাস্তার সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়েছিল। দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে চিকিৎসকরা শাহিনবাগের আন্দোলনের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন।

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ৩২ সংখ্যা)