তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কর্মসংস্থানের ফানুস ফেটে গেল

১৯৯০-এর দশক। তথ্য প্রযুক্তির আবির্ভাবের পর উন্নত দেশগুলিতে এই শিল্প কী অসম্ভবকে সম্ভব করছে তার কাহিনী তখন অনেকের মুখে। এ দেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের রমরমা নিয়ে গল্পের শেষ নেই। উচ্চমাধ্যমিকের পর কম্পিউটার শেখার বা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজে ঢোকার প্রবল ঝোঁক তখন ছাত্র-যুবদের মধ্যে। চোখে রঙিন স্বপ্ন– দেশে বা বিদেশে মোটা মাইনের এবং বিশাল সম্মানের নিশ্চিত চাকরি। টিসিএস, ইনফোসিস, উইপ্রো, মাইক্রোসফট, গুগলের মতো কোম্পানিতে সন্তানের চাকরি তখন যে কোনও বাবা-মায়ের কাছেই গর্বের বিষয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ছাত্র-যুবদের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিপুল চাকরির স্বপ্ন দেখাতেন। তেলেগু দেশম নেতা, অন্ধ্রপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের স্তুতিতে শীর্ষে ছিলেন। তিনি তার থেকে রাজনৈতিক ফয়দা তুলতেও সচেষ্ট ছিলেন। বলেছিলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ভারতকে কেউ হারাতে পারবে না। অন্যান্য রাজ্যের শাসকরাও এই প্রতিযোগিতার ময়দানে নেমে গিয়েছিলেন। তুঙ্গে উঠে গিয়েছিল মানুষের স্বপ্ন। শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বজুড়ে বহু মানুষ সেই স্বপ্নে বিচরণ করেছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তির এই বিপুল বিকাশ ও সম্ভাবনা দেখে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম একে বলেছিল ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’।

কিন্তু একটি দশক যেতে না যেতেই বেকার যুবকদের স্বপ্ন একটু একটু করে ভাঙতে শুরু করল। ২০২৩-এ এসে তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। হঠাৎ কী কারণ ঘটল? পুরনো, নতুন সব ধরনের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় ব্যাপক হারে কর্মী ছাঁটাই হতে শুরু হল। দেখা যাচ্ছে, এই ক্ষেত্রে বিশ্বে এক বছরে প্রায় ২ হাজার বার ছাঁটাইয়ের কারণে কর্মহীন হয়েছেন ৫ লক্ষের বেশি মানুষ। এর দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকায়, ৩৫-৪০ হাজার ছাঁটাই নিয়ে বিশ্বের মধ্যে দু’নম্বরে রয়েছে ভারত। ভয়াবহ বিষয় হল, ২০২১-এর তুলনায় ২০২২-এ ছাঁটাই বেড়েছে ৬৪৯ শতাংশ। অ্যাকসেঞ্চারে ছাঁটাই হয়েছে ১৯ হাজার, অ্যামাজনে ১৮ হাজার, গুগলে ১২ হাজার, মেটা-তে ১১ হাজার, মাইক্রোসফটে ১০ হাজার, সেলসফোর্সে ৮ হাজার। টুইটার ছাঁটাই করেছে ৫০ শতাংশ কর্মী। ২০২৩-এ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ছাঁটাই কর্মীর সংখ্যা আরও বেশি। ২০২২-এর নভেম্বরের পর মেটা ২০২৩-এর মার্চে আরও ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং পাঁচ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে। ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সবচেয়ে বড় পাঁচটি প্রতিষ্ঠান টিসিএস, ইনফোসিস, উইপ্রো, এইচসিএল, টেক মাহিন্দ্রা ২০২৩-এ মাত্র ৮৪ হাজার মতো নিয়োগ করেছে, যা গত বছরের থেকে ৬৯ শতাংশ কম। ইনফোসিসের জানুয়ারি-মার্চ আর্থিক ফলাফলের রিপোর্ট বলছে, কোম্পানির পে-রোলে থাকা ২৩ শতাংশ বা ৬৮,৫০০ কর্মীকে দেওয়ার মতো কাজ তাদের সংস্থার নেই। অথচ তাদের প্রতি মাসে বেতন দিতে হচ্ছে এবং এখন তারা কোম্পানির ঘাড়ে বোঝা হয়ে রয়েছে। ছাঁটাই চলছে ওলা ক্যাব, বাইজুস, সুইগি, জোম্যাটো, দুনজো, বেদান্ত ইত্যাদি সংস্থাগুলিতেও। আর বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশ পুঁজিপতিদের সাহায্য করেছে শ্রমনিবিড় শিল্প থেকে পুঁজি সরিয়ে নিয়ে সেগুলিকে বন্ধ করতে। আর বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির আরও অভাবনীয় উন্নতি হয়ে এই প্রযুক্তিটি শিল্প ও উৎপাদনের বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অটোমেশনের একটি সামগ্রিক চলমান ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এই যান্ত্রিক স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি শুধু উৎপাদনের ক্ষেত্রেই নয়, মানুষের সাহায্য ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগের মাধ্যমে বহু সমস্যার বিশ্লেষণ ও তার সমাধান করতে সক্ষম। তার ফলে কিছুদিন আগেও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের একটি শিল্পে যত কর্মীর প্রয়োজন হত, এখন আরও অনেক কম কর্মী দিয়ে আগের চাইতেও অনেক বেশি পরিমাণে কাজ করিয়ে নিতে পারছে এবং লক্ষ লক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী উদ্বৃত্ত হচ্ছে এবং তাদের উপর ছাঁটাইয়ের খড়গ নেমে আসছে। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স) ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের প্রসার বাড়লেও কৃত্রিম মেধার ব্যবহারে চাকরির সুযোগ গত বছরের থেকে এ বছর ২৫ শতাংশ কমেছে। দেশের চারটি শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ ত্রৈমাসিকে নিয়োগ করেছে মাত্র ১৯৪০ জনকে, যা গত দু’বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। নতুন নিয়োগের চাহিদা যেমন তলানিতে, তেমনি শুরুতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজের যে আপাত নিশ্চয়তা ছিল, তাও আজ নেই। তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞানের অধিকারী হয়ে শিক্ষিত বেকার যুবকরা তাই কাজের খোঁজে অন্যত্র যেতে বাধ্য হচ্ছে।

সরকার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে শ্রম আইনের বেশ কিছু ধারাকে অন্তর্ভুক্ত করেনি। ফলে এখানে মালিকরা কর্মচারীদের শোষণে আরও বেশি বেপরোয়া। শ্রম-আইন মানলে কর্মীদের যতটুকুও সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়, সে সবেরও কোনও বালাই নেই তাদের। সেজন্য কর্তৃপক্ষ প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা না দিয়েই দিন নেই, রাত নেই কর্মচারীদের যতক্ষণ ইচ্ছা খাটিয়ে নেয়। সমস্যা হল অল্প হলেও একদল তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী নিজেদের শ্রমিকশ্রেণির একজন বলে মনেও করেন না। কিন্তু মালিকদের শ্রমআইন না মানার কারণে যদি কেউ প্রতিবাদ করে তা হলে তার মেলে সারা জীবনের জন্য ছুটি। কারণ, উচ্চশিক্ষিত ও প্রযুক্তিগত ভাবে দক্ষ হাজার হাজার বেকার যুবক যে এখন যে কোনও বেতনে চাকরির আশায় বসে রয়েছে!

কেন্দ্রের মোদি সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর সম্প্রতি কেরালার এক কলেজে ছাত্র-যুবদের বলেছেন, ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ছাঁটাই হচ্ছে না, আমেরিকায় হচ্ছে। তাঁর কথা সত্য ধরলে দেশে ছাঁটাইয়ের সরকারি বা বেসরকারি পরিসংখ্যানগুলিকে মিথ্যা বলতে হয়। আর সরকারি তথ্যের ক্ষেত্রে মন্ত্রীর বক্তব্যকে কী বলা হবে তা বিজেপি নেতারাই ঠিক করুন।

ছাঁটাইয়ের জন্য কর্তৃপক্ষ কর্মীদের দক্ষতার অভাব এবং বর্তমানে কাজের সাথে কর্মীদের পাল্লা দিতে না পারাকে অজুহাত করছেন। খোদ ইনফোসিসের এক কর্তার বক্তব্যে এই যুক্তির পক্ষে সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ এবং ট্রেনিংপ্রাপ্ত বহু কর্মী রয়েছেন। কিন্তু এখানে আর্থিক বৃদ্ধির গতি খুব কম হচ্ছে। সেজন্য কর্মীদের বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

কেন আর্থিক বৃদ্ধিতে গতিহীনতা? বলা হচ্ছে, আমেরিকা এবং ইউরোপের ব্যাঙ্কিং, ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এবং বিমার ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে অনিশ্চয়তার মেঘ দানা বেঁধেছে, তার ফলে চাহিদা বাড়ছে না। সেজন্য ছাঁটাই। কেউ মূল্যবৃদ্ধি এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে ধাক্কাকে দায়ী করেছেন। কিন্তু এগুলি হল সমস্যাকে খণ্ড খণ্ড করে দেখা, সামগ্রিকতায় নয়। সামগ্রিক ভাবে দেখতে গেলে তাকাতে হবে বিদ্যমান পুঁজিবাদী অর্থনীতির গভীরে।

আসলে শিল্পপতি বা বুর্জোয়া অর্থনীতিবিদ বিশেষজ্ঞরা ছাঁটাইয়ের যে কারণই দেখান না কেন, এর মূল কারণ বিশ্বজোড়া পুঁজিবাদী ব্যবস্থার তীব্র বাজার সংকট। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রও তার বাইরে নয়। সারা দুনিয়ার মতো ভারতের পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও প্রবল সংকটগ্রস্ত, মুমূর্ষু। বাজারের অভাবে সে আজ ধুঁকছে। সে কারণে ৯০-এর দশকে বিপুল কর্মসংস্থানের ধুয়ো তুলে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে জোয়ার এসেছিল, তা আজ বুদ্বুদের মতো মিলিয়ে যাচ্ছে। একটা ক্ষেত্র সংকুচিত হলে পুঁজি মুনাফার তাগিদেই আর একটি ক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ খুঁজতে থাকে। অন্যান্য ক্ষেত্রে তীব্র বাজার সংকটে ভুগতে থাকা পুঁজি তথ্যপ্রযুক্তির নতুন ক্ষেত্র পেয়ে গিয়েছিল এবং সেই ক্ষেত্রে তখন আপাত জোয়ার এসেছিল। শ্রমিক-শোষণের নতুন এই ক্ষেত্রেও নতুন নতুন উপায়ে কর্মীদের শ্রম শোষণ করে বিপুল মুনাফা লুটতে থাকল মালিক। কিন্তু ক্রমে এই ক্ষেত্রের বাজার দখল নিয়েও যখন দেশি-বিদেশি পুঁজিপতিদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হল, ছোট কোম্পানিগুলিকে বড় পুঁজিপতিরা গিলতে শুরু করল, বাজার প্রসারণের সমস্ত সুযোগ বন্ধ হল, তখন থেকে এর ক্ষয় শুরু হল। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি অর্থনীতির সামনে যে বিরাট সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছিল, তাকে কাজে লাগাতে হলে উৎপাদন শিল্পের যে ধারাবাহিক বিকাশের প্রয়োজন ছিল, যেখানে এই প্রযুক্তিকে ক্রমাগত কাজে লাগানো যেত, পুঁজিবাদের চরম ক্ষয়িষ্ণুতার যুগে তা আজ আর সম্ভব নয়। তাই তা মুষ্টিমেয় মালিকের মুনাফা বাড়াতে পারলেও বৃহত্তর বাজার তৈরি করতে পারল না। ফলে এই ক্ষেত্রেও ছাঁটাই তীব্র হতে থাকল। স্বপ্নের জোয়ারে ভাসা তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্মীদের মধ্যেও হাহাকার পড়ে গেল।

যে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশকে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ বলে অভিহিত করেছিল, সেই ফোরামই বলেছে ২০৩০ সালের মধ্যে অত্যাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ৮০ কোটি মানুষের কাজ কেড়ে নেবে। কাজ চলে যাওয়া এই বিপুল মানুষের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রও রয়েছে।

শিল্প বিপ্লবের ফলাফল বিশ্লেষণ করে বহুদিন আগেই মাক্স-এঙ্গেলস তাঁদের বিখ্যাত ‘কমিউনিস্ট ইস্তেহার’-এ লিখেছিলেন, ‘‘বুর্জোয়া সমাজ যে সম্পদ উৎপন্ন করে তাকে ধারণ করার পক্ষে বুর্জোয়া সমাজের অবস্থা বড়ই সংকীর্ণ।” পরবর্তীকালে এঙ্গেলস তাঁর ‘অ্যান্টি ড্যুরিং’ বইয়ে লিখেছেন, ‘‘… যন্ত্রের উন্নতিসাধন মানব শ্রমকে অনাবশ্যক করে তোলে। যন্ত্রের প্রবর্তন ও প্রসার যেমন লক্ষ লক্ষ কায়িক শ্রমিককে স্থানচ্যুত করেছে, তেমনি যন্ত্রের উন্নতিসাধন অধিক থেকে অধিকতর সংখ্যায় যন্ত্র-শ্রমিকদেরই অপসারিত করে, যার পরিণামে পুঁজির গড়পড়তা প্রয়োজনের অতিরিক্ত মজুরি-শ্রমিকের সৃষ্টি হয়…”। তিনি লিখেছেন – ‘‘আমরা দেখেছি, সামাজিক উৎপাদনের নৈরাজ্য আধুনিক শিল্প-যন্ত্রের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীলতাকে এমন একটি বাধ্যতামূলক নিয়মে পরিণত করে, যার ফলে প্রত্যেকটি স্বতন্ত্র শিল্প-পুঁজিপতি প্রতিনিয়ত তার যন্ত্রের উন্নতিসাধন ঘটাতে, নিরন্তর সে-যন্ত্রের উৎপাদনী ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটাতে বাধ্য হয়। … … কিন্তু ব্যাপকতা ও তীব্রতা উভয় দিক থেকেই বাজারের সম্প্রসারণ ক্ষমতাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন কতকগুলি নিয়ম প্রধানত নিয়ন্ত্রণ করে এবং এই নিয়মগুলি তুলনায় অনেক কমজোরী। উৎপাদনের প্রসারের সঙ্গে বাজারের সম্প্রসারণ তাল রাখতে পারে না। সংঘাত অনিবার্য হয়ে ওঠে এবং যেহেতু পুঁজিবাদী উৎপাদন পদ্ধতিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ না করা পর্যন্ত এই সংঘাতের সত্যিকারের কোনও সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়, তাই সংঘাতগুলি পর্যায়ক্রমে আবির্ভূত হতে থাকে। পুঁজিবাদী উৎপাদন আবার নতুন পাপচক্র জন্ম দেয়।”

এর ফলে যে কোনও ক্ষেত্র হোক না কেন, ছাঁটাই পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে। আবারও সেই পুরনো বিতর্ক উঠে আসে– যন্ত্রই কি শ্রমিকদের কাজ খেয়ে নিচ্ছে? বিজ্ঞান কি শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের মুখে ঠেলছে? এই প্রশ্নেও মাক্সের্র শিক্ষা স্মরণীয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুফল সমগ্র মানবসমাজের কাছে পৌঁছে দিতে মাক্স-এঙ্গেলস যে পথ দেখিয়েছেন তা হল, ‘পুঁজিবাদী উৎপাদন পদ্ধতিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ’ করা। এটিই শ্রমিকশ্রেণির ইতিহাস নির্ধারিত কর্তব্য। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্মীরাও সেই কর্তব্য এড়িতে পারে না। এড়িয়ে গেলে সঙ্কটের স্থায়িত্ব এবং তীব্রতাই বাড়বে।