জাতীয় শিক্ষানীতির প্রতিবাদে তামিলনাড়ূতে সরকারি কমিটি থেকে পদত্যাগ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের

ফাইল চিত্র

রাজ্যের জন্য একটি শিক্ষানীতি তৈরি করতে তামিলনাড়ূর ডিএমকে সরকার গত বছর ১৩ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি তৈরি করেছিল। এতে আহ্বায়ক-সদস্য ছিলেন রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এল জওহর নেশন। তিনি ওই কমিটিতে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে না পারার এবং কমিটির সরকারি সদস্যদের দ্বারা তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে শাসানি, অপমান প্রভৃতির অভিযোগ করে সম্প্রতি কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।

অধ্যাপক নেশন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসাবে তামিলনাড়ূর জনগণের জীবনের সমস্যা, সামাজিক অবস্থা, শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্ভূত সমস্যা প্রভৃতি বিষয়গুলিকে সামনে রেখে বিজ্ঞান এবং যুক্তিনির্ভর একটি শিক্ষানীতি তৈরিতে উদ্যোগী হন। কিন্তু এই কাজে তিনি সরকারি সদস্য অফিসারদের দ্বারা পদে পদে বাধা পেতে থাকেন। তাঁর কাজে কতগুলি নির্দিষ্ট শর্ত বেঁধে দেন তাঁরা। তিনি স্বাধীন ভাবে কাজ করার দাবি জানিয়ে এবং অফিসার-সদস্যদের আচরণের বিরুদ্ধে কমিটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ডি মুরুজেশনের কাছে অভিযোগ জানান। চেয়ারম্যান কোনও প্রতিকারের উদ্যোগ না নিয়ে নীরবই থাকেন। এই পরিস্থিতিতে অধ্যাপক নেশন মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেও কোনও প্রতিক্রিয়া না পেয়ে তিনি বুঝতে পারেন, সরকার স্বাধীন কোনও শিক্ষানীতি চায় না। দেখা যায়, রাজ্যের শিক্ষানীতির নামে আসলে যা তৈরি হতে যাচ্ছে তা বাস্তবে জাতীয় শিক্ষানীতিরই অনুকরণ মাত্র।

অধ্যাপক নেশন বলেন, ১৯৪৯-এ রাধাকৃষ্ণন কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটি সদস্যদের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ছাত্রস্বার্থে শিক্ষানীতি তৈরি করা দরকার ছিল। কমিটি গঠনের ১১ মাস অতিক্রান্ত হলেও শিক্ষার মৌলিক বিষয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কমিটির কাজে তাঁর কোনও কার্যকরী ভূমিকাই থাকবে না বুঝে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক নেশন অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। সেভ এডুকেশন কমিটি দেশ জুড়ে সর্বনাশা জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন অধ্যাপক নেশন। দেশের মানুষ তাঁর এই বলিষ্ঠ ও সাহসী ভূমিকার প্রতি কুর্নিশ জানাচ্ছে।