চিকিৎসকদের আন্দোলনের জয়

গত বছরের মতো এবারও রাজ্য সরকার নিট, পিজি কোয়ালিফায়েড এবং ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরিরত সরকারি চিকিৎসকদের একটা বিরাট অংশকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে ২৮ ফেব্রুয়ারি একটা নোটিস জারি করে বলে এ বছর ২৩৭ জনের বেশি কাউকে এমডি/এমএস পড়ার সুযোগ দেওয়া হবে না৷ যদিও গ্রামীণ হাসপাতাল স্তরে ৯০ শতাংশের বেশি বিশেষজ্ঞের পদ শূন্য পড়ে রয়েছে৷

সরকার গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নের যতই ফলাও প্রচার করুক, এ কথা আজ প্রমাণিত যে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আজ ভেঙে পড়ার ফলে গ্রাম থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী রেফারর্ড হয়ে কলকাতায় আসতে বাধ্য হন৷

গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এ বছরে নিট, পিজি উত্তীর্ণ সরকারি ডাক্তারদের এমডি/ এমএস পড়ার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের নেতৃত্বে বারবার ডাইরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিসেস, ডাইরেক্টর অফ মেডিকেল এডুকেশন এবং প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়৷ কিন্তু তাঁরা অনড় থাকায় অবশেষে এসডিএফ–এর নেতৃত্বে ১১৫ জন সদস্য আদালতের দ্বারস্থ হন৷

ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল (ডব্লিউবিএটি)–এর বিচারপতি সৌমিত্র পাল এবং মি. সুবেশ দাসের সামনে আইনজীবী প্রতীক ধর বলেন, ‘সরকারি হিসাব অনুযায়ী যত সংখ্যক চিকিৎসক তিন বছর বা তার বেশি দিন ধরে চাকরি করছেন তার ১০ শতাংশের সমান ৪৬৬ বা তার বেশি হওয়ার কথা৷ কিন্তু স্বাস্থ্যভবন ২৩৭ জনের বেশি এ বছর ভর্তি হতে দেবে না এবং টিআর দেবে না৷ বিচারপতি সৌমিত্র পাল সরকারের ২৩৭ সংখ্যা  নির্ধারণকে বেআইনি বলে চিহ্ণিত করেন এবং এ বছর ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্ত যোগ্য আবেদনকারীদের ভর্তি নেওয়ার জন্য এক অন্তর্বতী রায় দেন৷

এসডিএফ–এর পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার সজল বিশ্বাস এক বিবৃতিতে এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আজকের এই রায় ঐতিহাসিক৷ এই জয় চিকিৎসকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জয়৷ সঠিক নেতৃত্বে জনস্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দাবি নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলে যে কোনও দাবি আদায় করা সম্ভব’৷

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৩৫ সংখ্যা)