কমরেড মহসিন আলির জীবনাবসান

মুর্শিদাবাদ জেলার ভগবানগোলার খড়িবোনা আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক কমরেড মহসিন আলি ৪ জুন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বহরমপুর মাতৃসদন হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। মৃত্যুসংবাদ এলাকায় পৌঁছতেই দলের কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

কমরেড মহসিন আলি কিশোর বয়স থেকেই ভাল ফুটবল খেলার সুবাদে ভগবানগোলা ২নং ব্লকের টিকলির চর সহ আশেপাশের এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। এলাকায় ক্লাব গড়ে তুলতে তিনি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৪ সালে দলের বর্তমান জেলা সম্পাদক কমরেড সাধন রায়ের মাধ্যমে কমরেড মহসিন আলি সর্বহারার মহান নেতা কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তার সংস্পর্শে আসেন এবং ধীরে ধীরে দলের কর্মী হয়ে ওঠেন। পরে প্রাথমিক শিক্ষক হওয়ার সুবাদে শিক্ষক সংগঠন বি পি টি এ-র সাথে যুক্ত হন এবং এলাকার শিক্ষকদের যুক্ত করে ইংরেজি পুনঃপ্রবর্তন ও পাশ-ফেল চালুর দাবিতে শিক্ষা আন্দোলন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বৃত্তি পরীক্ষা পরিচালনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। দলের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এলাকার মানুষকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। দলের প্রচার এবং প্রসারকে তিনি ব্যক্তিগত কাজের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়ার জন্য সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় পার্টি কংগ্রেসের প্রাক্কালে আঞ্চলিক সম্মেলনে তিনি লোকাল সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে তাঁর নেতৃত্বেই এলাকায় গড়ে ওঠে বন্যা-ভাঙন প্রতিরোধ আন্দোলন। এই আন্দোলন ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে এবং পুলিশের গুলিতে শহিদ হন কমরেড নহিরউদ্দিন।

কমরেড মহসিন আলি ছিলেন মৃদুভাষী, প্রচারবিমুখ, যুক্তিবাদী এবং সাহসী। এই সব গুণেই তিনি সাধারণ গরিব মানুষের আপনজন হয়ে উঠেছিলেন। পরিবারের সদস্যদেরও দলের সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে দল হারাল একজন সাহসী, একনিষ্ঠ সংগ্রামী কর্মীকে এবং এলাকার গরিব মানুষ হারাল তাদের আপনজনকে।

কমরেড মহসিন আলি লাল সেলাম

গণদাবী ৭৩ বর্ষ ৩৭ সংখ্যা