এনআরসি–র নামে হয়রানির প্রতিবাদে আসামে বিক্ষোভ

এন আর সি–র চূড়ান্ত খসড়ায় নাম রয়েছে৷ তবুও ভেরিফিকেশনের জন্য দূরদূরান্তের সরকারি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে৷ এন আর সি–তে যাঁদের নাম অন্তর্ভুক্তি নানা অছিলায় আটকে দেওয়া হয়েছে হয়রানির শিকার শুধু তারাই নন, যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরাও৷ আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার উগ্র প্রাদেশিকতাবাদীদের সুরে সুর মিলিয়ে একটা বিরাট অংশের প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকের জীবন তছনছ করে দিচ্ছে৷ সরকার শুধু এন আর সি–র জাঁতাকলেই জনজীবনকে পিষছে না, জনজীবন পিষ্ট হচ্ছে অপশাসনেও৷ বরাক উপত্যকায় ৫০ লক্ষ জনগণের চিকিৎসার একমাত্র হাসপাতাল শিলচর মেডিকেল কলেজ৷ স্থাপনের ৫০ বছর পরেও সেখানে নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি বিভাগ চালু হল না৷ বরাক উপত্যকার একমাত্র ভারি শিল্প পাঁচগ্রাম কাগজ কল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ৷ খোলার কোনও উদ্যোগ নেই৷

এই অবস্থায় জনজীবনের সমস্যাগুলি সমাধানের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে এস ইউ সি আই (সি) কাছাড় জেলা কমিটি৷ উক্ত সমস্যাগুলির সমাধান ছাড়াও অবিলম্বে প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ–ফেল চালু, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সমস্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ, চাষিদের সার–বীজ–কীটনাশক স্বল্প মূল্যে প্রদান, মূল্যবৃদ্ধি রোধ, চাষির ফসলের সহায়ক দাম, শিলচর–সৌরাষ্ট্র মহাসড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, ভূমিহীনদের পাট্টা প্রদান, বরাক উপত্যকার চা–শ্রমিকদের মজুরি অন্তত ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সমান করা, মদ–জুয়া–সাট্টা–অশ্লীলতার প্রসার রোধ, বেকারদের কর্মসংস্থান ইত্যাদি দাবিতে ২২ ফেব্রুয়ারি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল জেলা উপায়ুক্তের দপ্তরে যায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দাবিপত্র পেশ করা হয়৷ বিক্ষোভ সভায় জেলা সম্পাদক কমরেড ভবতোষ চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্বাচন এলে কংগ্রেস, বিজেপির নেতারা প্রতিশ্রুতি দেন, জনগণের সব সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার৷ কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়েই  প্রতিশ্রুতি বেমালুম ভুলে যান৷ ক্ষোভের সাথে বলেন, সরকারি হিসাবে রাজ্যে ২২ লক্ষ বেকার৷ কর্মসংস্থানের সুসংহত কোনও ব্যবস্থাই করছে না পরের পর সরকার৷ তিনি বলেন, আন্দোলন করেই হকের পাওনা আদায় করতে হবে৷

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ২৯ সংখ্যা)