‘একজন নাট্যকার ও কবি হিসাবে এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পারি না’

কর্ণাটকের বিশিষ্ট নাট্যপরিচালক এস রঘুনন্দন সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন৷ দেশে ধর্মের নামে একের পর এক গণপ্রহার এবং বিরোধী স্বরকে দমন করার আবহের বিরুদ্ধে ‘হতাশা’ জানিয়েই তাঁর এই পদক্ষেপ৷ গত কালই এই পুরস্কার ঘোষিত হয়েছিল ৷ এর আগেও মোদি জমানায় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে সরব হয়ে বহু বিশিষ্ট জন তাঁদের সরকারি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন৷

রঘুনন্দন এ দিন বলেন, ‘‘এটা আমার প্রতিবাদ নয়৷ আমার সিদ্ধান্ত তীব্র হতাশা আর অসহায়তা থেকে৷ অ্যাকাডেমির প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে৷ পুরস্কারপ্রাপকদের প্রতিও শ্রদ্ধা আছে৷ আমি সকলকে ধন্যবাদ দিয়েই নিজের অপারগতা জানাচ্ছি৷’’

অ্যাকাডেমির উদ্দেশে চিঠিতে রঘুনন্দন লিখেছেন, ‘‘সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি স্বশাসিত সংস্থা৷ সামগ্রিক ভাবে স্বশাসনের  নীতিতেই চালিত হয়েছে বরাবর৷ আমাকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করায় আমি অ্যাকাডেমিকে ধন্যবাদ জানাছি৷ … কিন্তু দেশ জুড়ে ধর্মের নামে এমনকি খাদ্য নিয়েও আজ হানাহানি, গণপ্রহার সংঘটিত হচ্ছে৷ শাসকেরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তাতে মদত দিচ্ছেন৷ … শিক্ষাক্রমের মধ্যে বিদ্বেষ আর অযুক্তির বীজ বুনে দেওয়া হচ্ছে ৷ ভারতীয় কথাটার মানে বদলে যাচ্ছে৷ বসুধৈব কুটুম্বকমের ধারণা মুছে যাচ্ছে, …অগণিত বুদ্ধিজীবী এবং সমাজকর্মীকে ইউএপিএ–তে আটক করা হচ্ছে৷ …আমার দেশের নাম করে যখন আমাদের দেশের প্রকৃত ধর্মমার্গীদের প্রতি এই সব অন্যায় হয়ে চলেছে, তখন আমি একজন নাট্যকার ও কবি হিসাবে এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পারি না৷ আমার অন্তর্যামী আমাকে সেই অনুমতি দেয় না৷’’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৯ জুলাই, ২০১৯

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৫০ সংখ্যা)