এআইডিএসও-র আন্দোলন শিক্ষক সমাজকেও ভাবাচ্ছে

সমস্ত ফি মকুব, অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা প্রভৃতি দাবিতে পুলিশি নির্যাতনের মোকাবিলা করে রাজ্যব্যাপী পথ অবরোধ এই করোনা বিধ্বস্ত পরিস্থিতিতে ছাত্র আন্দোলনে নতুন তরঙ্গ সৃষ্টি করেছে। এই দাবিগুলি সহ ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজ্য কমিটির আহ্বানে সারা রাজ্যেই বাঁকুড়া শহরে শুরু হয়েছে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান। কয়েকদিন আগে ১১ জন ছাত্রকর্মীর মুক্তির দাবিতে গড়ে ওঠা উত্তাল আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে এই শহরে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে এক অভূতপূর্ব আবেগ। নিজস্ব উদ্যোগে প্রচার টেবিলে রাখা স্বাক্ষর ফর্মে স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন তাঁরা। জানিয়ে যাচ্ছেন দাবিগুলির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন, বাড়িয়ে দিচ্ছেন আর্থিক সাহায্য। এক ছাত্রকর্মীর হাত থেকে কলম নিয়ে এক ব্যক্তি স্বাক্ষর করে বললেন, ‘শিক্ষাকে বাঁচানোর দাবিতে আজ যদি না তোমাদের আন্দোলনের পাশে থাকি, তাহলে জীবনে করব কি?’ পথচলতি এক প্রবীণ মহিলা হঠাৎই পোস্টার-ব্যানার দেখে দাঁড়িয়ে যান। কাছে এসে স্বাক্ষর করেন এবং এক গভীর মাতৃস্নেহে জিজ্ঞাসা করে বলেন, ‘তোমাদের এই আন্দোলনের সেই ১১ জন কি ছাড়া পেয়েছে? তোমাদের জন্য এই কদিন বড়ই কষ্ট পেয়েছি।’ এভাবেই স্বাক্ষর করতে এসে বহু মানুষ পরম স্নেহে বারবার জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘তোমাদের ১১ জনকে ছেড়েছে তো?’ এক শিক্ষক এসে বলেলেন, ‘স্বাক্ষর তো করবই, কিন্তু তোমাদের সেই ১১ জন আন্দোলনকারীকে কি জেল থেকে ছেড়েছে?…চিন্তা করো না ভাই, তোমাদের এই আন্দোলন আজ সমগ্র শিক্ষক সমাজকেও ভাবিয়েছে। যে কোনও ধরনের সাহায্যে আমাকে তোমাদের পাশে সবসময় পাবে, আন্দোলন তোমরা চালিয়ে যাও।’ কেউ বলেছেন, ‘স্কুল কলেজ এখনই খুলে দেওয়া দরকার। আমাদের ছেলেমেয়ের তো সর্বনাশ হয়ে গেল!’ একজন বরিষ্ঠ নাগরিক স্বাক্ষর করে বললেন, ‘তোমাদের দাবি অত্যন্ত সঠিক। অথচ পুলিশ তোমাদেরকেই অত্যাচার করল! আমি সবসময়তোমাদের পাশে আছি।’ একজন অশীতিপর বৃদ্ধ আশা ব্যক্ত করে গেলেন, সামনের দিন খুব ভয়ঙ্কর। তোমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। তা ছাড়া আর কে আছে বলো তো?’

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ৩ সংখ্যা