অলিম্পিকে সাফল্য ক্রীড়াবিদদের ব্যক্তিগত সংগ্রামের ফল, সরকারের ভূমিকা শূন্য

স্বাধীনতা ৭৪ বছর পর পদকের হিসাবে ‘টোকিও অলিম্পিক’ই ভারতের সেরা অলিম্পিক। মোট সাতটি পদক জিতেছে ভারত। এর আগে ২০১২-তে মোট ৬টি পদক জিতেছিল। এবার ‘জ্যাভলিন থ্রো’তে সোনা জেতার সঙ্গে সঙ্গে নিরজ চোপরা ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে’ প্রথম ভারতীয় পদক বিজয়ী হিসেবে নিজের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখে ফেললেন। রুপোজয়ী মীরাবাঈ চানু, ববি দাহিয়া এবং ব্রোঞ্চ জয়ী পিভি সিন্ধু, লাভলিনা বরগোঁহাই, বজরং পুনিয়ার কৃতিত্বও কোনও অংশে কম নয়।

কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে বারবার উঠে আসছে পুরুষ ও মহিলা হকি দলের সফলতার কথা। পুরুষ হকিতে সেই ১৯৮০ সালের পর দীর্ঘ চল্লিশ বছরের খরা কাটিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছে ভারত। সেমিফাইনালে হেরে পদক না পেলেও ভারতীয় মহিলা হকি দলের ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই সফলতায় প্রতিটি ক্রীড়াপ্রেমী গর্বিত। পরবর্তীকালে প্যারা অলিম্পিকেও ভারতীয় প্রতিযোগীরা বেশ কিছু পদক জিতেছেন। প্রতিযোগীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে এই প্রশ্ন বারবার ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমী জনগণকে ধাক্কা দেয় যে, সামগ্রিকভাবে কেন ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতের এমন হতশ্রী অবস্থা?

স্বাধীনতার পর অলিম্পিকে এ পর্যন্ত ভারত যতগুলো সোনা জিতেছে (৭টি) বিশ্বখ্যাত সাঁতারু মাইকেল ফেলপস তার থেকে অনেক বেশি জিতেছেন একাই (২৩টি)। ১৯৪৮ এর লন্ডন অলিম্পিকে এক স্মরণীয় ফুটবল খেলেছিল সদ্য স্বাধীন দেশ ভারত, বুটের বিরুদ্ধে খালি পায়ে। ১৯৫৬-র অলিম্পিকে ফুটবলে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল ভারত। ১৯৫১ আর ৬২-র এশিয়ান গেমসে সোনা আর ১৯৭০-এ ব্রোঞ্জ জিতেছিল ভারতীয় ফুটবল দল। ১৯৬৪তে এএফসি’র এশিয়া কাপে ভারত রানার্স হয়েছিল। এরপর যত দিন গড়িয়েছে ফুটবলে তত পিছিয়েছে ভারত। এখন আমরা রাত জেগে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা দেখি। পরাধীন ও সদ্য স্বাধীন ভারত যে হকিতে ছিল বিশ্বসেরা তাতেও দীর্ঘ ৪০ বছর পর পদক এল! ‘ট্রাক এন্ড ফিল্ড’ স্বাধীনতার ৭৪ বছরে এই প্রথম সোনা জিতল ভারত! কেন এই অবস্থা?

খেলাধূলার জগতে সাফল্য পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আন্তরিক ও নিরলস প্রয়াসী হতে হয়। প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের তুলে আনার জন্য চাই তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পরিকল্পিত পদক্ষেপ। দরকার সেই সমস্ত দক্ষ মানুষের যাঁরা খেলাটা জানেন, চেনেন এবং বোঝেন। যাঁরা খেলাটাকে ঠিক পথে এগিয়ে নিয়েযেতে পারবেন। আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় এগোতে হলে প্রয়োজন প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো। কিন্তু খেলাধূলার উন্নতিতে সরকারের না আছে কোনও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, না আছে পরিকাঠামো সহ নানান বিষয়কে ঢেলে সাজানোর কোনও ভাবনা।

একসময় ভাবা হয়েছিল দেশের বিশেষ কিছু অঞ্চল আছে যেখানে একটি বিশেষ ধরনের খেলার প্রতিভা সহজাত, অন্য অঞ্চলের কাউকে অনেক কঠোর পরিশ্রম করে সেইখেলার কলাকৌশল রপ্ত করতে হয়, সেই সমস্ত অঞ্চলগুলিকে সেই বিশেষ ধরনের খেলার প্রতিভা তুলে আনার ক্ষেত্রে ও বিকাশে জোর দেওয়া হবে। যেমন, উত্তর ভারতে কুস্তি, জ্যাভলিন থ্রো, ডিসকাস থ্রো, শটপাটের মতো বিভিন্ন ফিল্ড গেম সহজাত। উত্তর-পূর্ব ভারত, লাদাখ ও মধ্যপ্রদেশের বনাঞ্চলে তীরন্দাজি সহজাত। দক্ষিণ ভারতে অল্প দূরত্বে দৌড় আর রাজস্থান সহ ভারতের পশ্চিম উপকূলে ও মহারাষ্ট্র্র-গুজরাটের একটি বিশেষ অঞ্চলের মানুষ লং ডিস্টেন্স রান ভালো পারে। এইরকম ভাবে নানা এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছিল সহজাত প্রতিভা তুলে আনার জন্য। কিন্তু সেই পরিকল্পনা খুব একটা বাস্তবায়িত হয়নি।

কোনও খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাল ফল করলে সেই খেলোয়াড়কে আর্থিক সহ নানান পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয় ঠিকই, কিন্তু খেলাধূলার উন্নতিতে সরকারের কিছু সদর্থক ভাবনা পরিলক্ষিত যে হয় না তা খেলার বাজেটের দিকে তাকালেইবোঝা যায়। ভারতে তিনটি স্পোর্টস সংস্থা স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া, ন্যাশনালস্পোর্টস ফাউন্ডেশন এবং নরেন্দ্র মোদির সাধের ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্প। এই সংস্থাগুলির ২০১৫-১৬, ১৮-১৯, ২০-২১, ২১-২২ সালের সরকারি অর্থ বরাদ্দের দিকে তাকালে যে কেউ বুঝতে পারবেন যে খেলাধূলার উন্নতিতে সরকারের কোনও ভাবনাই নেই। কখন বাজেট বাড়বে, কখন কমবে, কেন বাড়ানো হচ্ছে, কেনই বা কমানো হচ্ছে ? এর সঙ্গে খেলার কোনও সম্পর্ক নেই।

সংস্থার নাম ১৫-১৬ ১৮-১৯ ২০-২১ ২১-২২
সাই ৪০৭ ৩৫৫ ৫০০
এনএসএফ ৩৫০ ২৪৫ ২৮০
খেলো ইন্ডিয়া ৯৭ ৮৯০        ৬৫০

(টাকার অঙ্ক কোটিতে)

আবার বাজেটে যা বরাদ্দ করা হয় তার সিংহভাগই খরচ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণ, কর্মচারী-অফিসার-স্টাফ-কোচ সহ সবার মাইনে দিতে, নতুন স্টেডিয়াম তৈরি ও পুরনোকে রক্ষণাবেক্ষণ করা, জার্সি-ফুটবল-ভলিবল সহ খেলার নানান সামগ্রী কিনতে। ফলে প্রতিভা খুঁজে বের করা, তাকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় গড়ে তোলার মতো ধারাবাহিক বিষয় যা শুরু হয় একদম স্কুল থেকে তার জন্য কোথায় অর্থ আর কোথায় পরিকল্পনা ক্কভারতের মহিলা হকি টিম যে অস্টে্রলিয়াকে হারিয়ে প্রথম সেমিফাইনালে পৌঁছলো সেই অস্ট্রেলিয়ায় একটা হকি স্টেডিয়ামে যে টাকা খরচ করা হয় সেই টাকা ভারতে পুরো খেলায় খরচ হয়! ভারতের মহিলা হকি দল একের পর এক যে সমস্ত দেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে গেছে সেই সব দেশে একজন খেলোয়াড়ের পিছনে যে খরচ হয় সেই খরচ এখানে পুরো দলের পিছনেও করা হয় না! আমাদের দেশে খেলোয়াড় তৈরি হয় সরকারি পরিকাঠামোয় নয়, ব্যক্তিগত সংগ্রাম, লড়াই-আবেগ আর জেদের ফসল হিসাবে।

ভারতের বেশিরভাগ খেলোয়াড় নিম্নবিত্ত গরিব শ্রেণিভুক্ত, আদিবাসী পরিবার থেকে উঠে আসা। পারিবারিক অভাব-অনটন তাঁদের নিত্যসঙ্গী। অনাহার-অর্ধাহারে দারিদ্রে ভরা জীবনে খেলাই তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। খেলোয়াড়রা যদি মহিলা হন তা হলে তাদের প্রবল আর্থিক অসুবিধার সাথে সম্মুখীন হতে হয় নানা পারিবারিক-সামাজিক বাধা-বিপত্তির। এমনকি তাদের বাবা-মাকেও শুনতে হয় নানা কটূক্তি। যার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে গেলে প্রয়োজন হয় এক কঠিন মানসিকতার। ভোট পেতে যতই স্লোগান দেওয়া হোক ‘বেটি বাঁচাও- বেটি পড়াও’, যতই সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হোক সি বি এস ই পরীক্ষায় মেয়েরা ছেলেদের হারিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে, যতই মহিলা বিমানচালক হোক না কেন তাতে মহিলাদের নিয়ে সমাজের অবস্থান, ভাবনা বিন্দুমাত্র বদলায় না। সমাজই ঠিক করে মেয়েদের কী ভাবে চলা উচিত। কী পড়া উচিত। কী করা উচিত? লাভলিনাদের অলিম্পিক পদক জয় তাই সেই সমাজের ওপর একটা বিরাট পাঞ্চ । রানি রামপালদের এই সফলতা তাই দেশের গরিব মানুষের সংগ্রাম বিধ্বস্ত জীবনে সফলতার কাহিনি। এমন নয় যে, এই সফলতায় বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার নূ্যনতম পরিকাঠামো যা তারা দেয় তার বা কোচের কোনও ভূমিকা নেই। এইসবগুলির একটা ভূমিকা নিশ্চয়ই আছে কিন্তু এই সুবিধাগুলো পাওয়ার আগে আমাদের দেশের ক্রীড়াবিদদের সংগ্রাম বিধ্বস্ত এই জীবন উপন্যাসের চেয়ে কম কিছু নয়। তাই তাঁদের জীবনের সফলতা কবিতার মতো সুন্দর, আনন্দদায়ক, অনুপ্রেরণার।

মহিলা হকি দলের অধিনায়ক হরিয়ানার সাহানাবাদের রানি রামপালের বাবা দিনমজুর, মা পরিচারিকা। সংসারের নিত্য অভাব। বিদ্যুৎহীন ঘরে মশা আর মাছির গুনগুনানি। একটু বৃষ্টিতে সেই ঘর আবার জলে ডুবে যায়। এর মধ্যেই বড় হয়ে ওঠা। বাড়ির সামনে হকি একাডেমিতে খেলতে মন চাইতো কিন্তু কোচ নিতে নারাজ কারণ হকির কঠোর অনুশীলন নেওয়ার মতো ক্ষমতা রানির শরীরে নেই। বাবার হকি স্টিক কিনে দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাই কুড়িয়ে পাওয়া একটা ভাঙা হকি স্টিক দিয়ে সালোয়ার-কামিজ পরে নিজে নিজেই শুরু করলেন অনুশীলন। সেই দেখে অ্যাকাডেমির কোচ তাকে হকি খেলা শেখাতে রাজি হলেন কিন্তু বেঁকে বসল পরিবার। স্কার্ট পরে খেলতে দেবে না, কারণ সমাজ মানবে না। শরীরের পুষ্টির জন্য একটু দুধ খাওয়া দরকার, সবার খাওয়ার পর পড়ে থাকা দুধে জল মিশিয়ে খেত রানি। ২০১৭ সালে যখন পরিবারের জন্য একটা ফ্ল্যাট কিনলেন তখন পরিবারের সবাই পরস্পর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ছিলো অনেকক্ষণ। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী টুইট করে জানালেন আজ দেশের বিকাশ যাত্রার ঐতিহাসিক দিন কারণ ভারতের সব গ্রামে আজ বিদ্যুৎ পৌঁছে গেল। কিন্তু আমরা চমকে গেলাম অলিম্পিকের হকির সেমিফাইনালে দিন, যখন দেখলাম ঝাড়খণ্ডের গ্রাম বড়কি ছাপড়ের সবাই জেনারেটর ভাড়া করে গ্রামের গর্ব সেলিমা টেটের খেলা দেখল। আমরা জানলাম ২০১৮তে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা বলেছিলেন। সোনিপতের নেহা সোহেলের মাতাল পিতা প্রতিদিন তাকে মারধর করতেন। খাবার জুটত না তাই বাধ্য হয়ে মায়ের সাথে সাইকেল কারখানায় চাকায় স্পোক লাগিয়ে ৫ টাকা পেত তা দিয়েই পেট ভরাতো। নিশা বারষির পিতা দর্জি ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর মা কারখানায় কাজ করে সংসার চালাতেন।

লাভলিনা বরগোঁহাইয়ের মা তিন মেয়ের জন্ম দেওয়ায় পরিবারের লোকজন আর সমাজের তিরস্কার জুটত। ২০১৫ সালে অর্জুন পুরস্কার পাওয়ার সময় যে ১৫ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন তা খেলার জন্য নয়, অসুস্থ মায়ের কিডনির চিকিৎসা করাতে খরচ হয়ে যায়। এঁদের মতোই হরিদ্বারের বন্দনা, মিজোরামের লালবেন সিয়ামি, সুশীলা ডি গ্রেস, মনিকা, নবজ্যোৎ, সবিতা, বজরং পুনিয়াদের জীবন সংগ্রাম তাই রূপকথার মতো। এঁরা বুঝেছিলেন যে অভাব-অনটন আর দারিদ্রে ভরা দমবন্ধ করা জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে যদি কিছুটা শ্বাস নেওয়ার মতো অবস্থায় যেতে হয় তাহলে খেলাধূলাই হতে পারে একমাত্র মাধ্যম। তাই তারা প্রবল গরিবি আর দুরবস্থার মধ্যে স্বপ্ন দেখেছিল। এই স্বপ্ন পূরণে কোথাও তারা সরকারকে পাশে পাননি। সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্রীড়া বাজেটও এদের জীবনে কাজে আসেনি।

দেশের মানুষ অবাক হয়ে দেখে এদের স্বপ্ন পূরণের সংগ্রামে কোথাও না থেকে যখন সফলতা আসল তখন তার আলোকছটাকে নিজেদের স্বার্থে নেতা-মন্ত্রীরা প্রচারের কাজে লাগাচ্ছে। দেখাতে চাইছে সরকারের সফলতা হিসাবে। সফল পুরুষ ও মহিলা হকি দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী তাই নির্দেশ দিতে ভুলে যান না যে সেই ফোনালাপ যেন ভিডিও তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছাড়া হয়। অথচ যখন অর্থের অভাবে হকি দলের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ, তার প্রস্তুতি সবই বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল তখন প্রধানমন্ত্রী নিজে যেমন এগিয়ে আসেননি বা তার বন্ধু মুকেশ আম্বানি বা গৌতম আদানিকেও এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। ফোনালাপে যে মহিলা খেলোয়াড়দের কৃতিত্বে প্রধানমন্ত্রী গর্ববোধ করলেন সেই দলেরই খেলোয়াড় তথাকথিত দলিত বন্দনা কাটারিয়ার বাড়ির সামনে সেমিফাইনাল হেরে যাবার পর বাজি ফাটিয়ে উদযাপন, নাচানাচি করে, বর্ণবাদী কটূক্তি করে উচ্চবর্ণের একদল যুবক। দলিত হওয়ার জন্য তাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে দেখিনি এই ঘৃণ্য ঘটনার প্রতিবাদে একটা শব্দ খরচ করতে! তিনি কোনও এক আশ্চর্য কারণে সম্পূর্ণ নীরব।

ভারত সরকার অলিম্পিকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইট চালু করে। সেখানে না আছে কোনও প্রথিতযশা খেলোয়াড়ের ছবি, না আছে ক্রীড়াদপ্তরের নাম। শুধু মোদি আর মোদি। ওয়েবসাইটে প্রচারের সঙ্গে দেশের যুবকদের যুক্ত করার জন্য অনেক ছবি টুইট করা হয় যাতে খেলোয়াড়দের ছবি নয় শুধু মোদি আর যোগীর ছবি। অলিম্পিক নিয়ে সরকারের ও সরকারি দলের এই চর্চায় শুধু বিজেপি আর মোদি ছাড়া কিছু নেই। অলিম্পিক পদকজয়ী খেলোয়াড়দের হয়ত নানা পদক, নানা খেতাবে ভূষিত করা হবে, দেওয়া হবে অর্থসাহায্য কিন্তু তাতে যদি আমরা ভাবি দেশের খেলাধূলার উন্নতি বা বিকাশে সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি আর তার নীতির পরিবর্তন হবে তা হলে আমরা ভুল করব। পদক জয়ীদের এই সম্মানে ভূষিত সরকারকে করতে হয় না হলে তার মুখোশটা খসে পড়বে। কিন্তু পরদিন থেকেই সেই কৃতী খেলোয়াড়দের কী হল তার বিন্দুমাত্র খবর কেউ রাখবে না। প্রকৃতপক্ষে খেলোয়াড়দের এই সাফল্য তাঁদের জীবনযন্ত্রণা ও দীর্ঘশ্বাস থেকে জন্ম নিয়ে ঝড় তুলেছে অলিম্পিকের যুদ্ধে।

গণদাবী ৭৪ বর্ষ ৯ সংখ্যা